বিশেষ প্রতিনিধি: প্রতি গিগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা কিনতে সেলফোন অপারেটরদের ব্যয় হয় ২৬ পয়সা।অথচ গ্রহকদের কাছে একই পরিমাণ ডাটা ২০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করছে অধিকাংশ অপারেটর। এতে ব্যান্ডউইডথের দাম দফায় দফায় কমানো হলেও তার সুফল পাচ্ছে না গ্রাহক। যদিও অপারেটরদের দাবি, ব্যান্ডউইডথের যে দাম তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়, তা তাদের ডাটাভিত্তিক সেবার মোট ব্যয়ের ১-৩ শতাংশের বেশি নয়।
১ এপ্রিল শনিবার দৈনিক বণিক বার্তায় প্রকাশিত ‘১ গিগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা: ক্রয়মূল্য ২৬ পয়সা গড় বিক্রয় ২১৭ টাকা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, সেলফোন অপারেটররা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে প্রতি মেগাবিটস পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইডথ কিনছে ৩৯০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এক এমবিপিএস গতির সংযোগে মাস শেষে ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৯২ গিগাবাইট (জিবি)। এ হিসাবে প্রতি জিবি ডাটা কিনতে অপারেটরদের ব্যয় হয় ১৫-২১ পয়সা। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্নতাসহ অন্যান্য খাতে ৩০ শতাংশ অপচয় সমন্বয় করা হলেও তা দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১৪ জিবি। এতে প্রতি জিবি ডাটা কিনতে অপারেটরদের ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ২২ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ পয়সা, দুটোর গড় করলে যা দাঁড়ায় ২৬ পয়সা।
সেলফোন অপারেটরদের ডাটাভিত্তিক সেবার তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে গ্রামীণফোনের ১ জিবি ডাটার সরাসরি কোনো প্যাকেজ না থাকলেও ফ্লেক্সিপ্ল্যানের মাধ্যমে সমপরিমাণ ডাটা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ফ্লেক্সিপ্ল্যানে ৩০ দিন মেয়াদে ১ জিবি ডাটা কিনতে গ্রামীণফোনের গ্রাহকের ব্যয় ২৭৪ টাকা ২৮ পয়সা। একই পরিমাণ ডাটা কিনতে বাংলালিংকের গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে ২০৯ টাকা। রবি ও এয়ারটেলের ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ২১৩ টাকা ৬ পয়সা ও ২০৯ টাকা। তবে এক্ষেত্রে মেয়াদ ধরা হয়েছে ২৮ দিন। আর রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটকের ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য তুলনামূলকভাবে অন্যদের চেয়ে কম। প্রতিষ্ঠানটির ৩০ দিন মেয়াদি ১ জিবি ডাটা প্যাকেজের মূল্য ১৮০ টাকা। তবে গড় হিসাবে এ পাঁচটি অপারেটরের প্রতি জিবি ডাটার বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ২১৭ টাকা।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইন্টারনেট ডাটার মূল্য বাবদ গ্রাহকের কাছ থেকে বেশি অর্থ আদায়ের বিষয়টি মানতে রাজি নয় অপারেটররা। তাদের দাবি, ডাটাভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়, তার মাত্র ১-৩ শতাংশ হলো ব্যান্ডউইডথের মূল্য। সিংহভাগ অর্থই প্রতিষ্ঠানের মূলধনি ও পরিচালন ব্যয় সংশ্লিষ্ট। এসব ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে- নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণ, তরঙ্গ বরাদ্দ, বার্ষিক তরঙ্গ বরাদ্দ ফি ও লাইসেন্স ফি, বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য।