জাহিদ হাসান (ভেড়ামারা প্রতিনিধি) –
ভেড়ামারায় মন্দির কমিটি কে কেন্দ্র করে পৌর সেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক এর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় গতকাল উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। তার পরিবার সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মামলা দায়ের। ভেড়ামারা থানার মামলা নং-০২, তারিখ ৪-৮-২০২৩।
সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক এর স্ত্রী বিথী রানী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলার বিবরণ নিম্নরুপ-
আমি বিথী রাণী (৩৬) স্বামী-শ্রী সঞ্জয় কুমার প্রামানিক, সাং- কাচারী পাড়া (পৌর ০৫নং ওয়ার্ড), থানা-ভেড়ামারা, জেলা-কুষ্টিয়া অত্র থানায় হাজির হয়ে আসামী-০১। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান শোভন (৩৫), পিতা-মৃত মেজর, সাং-কাচারিপাড়া (পৌর ০৫নং ওয়ার্ড), ০২। মোঃ ইয়ামিন ইসলাম (৩২), পিতা-মোঃ জানারুল, সাং-বামনপাড়া দক্ষিণরেল গেট, ০৩। মোঃ প্রত্যাশা (৩৫), পিতা-মৃত মিলন, সাং-মহিলা কলেজপাড়া, ০৪। মোঃ অর্ণব (২৭), পিতা-মৃত মুক্তি, ০৫। মোঃ তামিম (২২), পিতা-মোঃ ইসলাম হাজী, উভয়সাং-কাচারী পাড়া (পৌর ০৫নং ওয়ার্ড), ০৬। মোঃ লিখন (২৫), পিতা-বাবলু @ করিয়ান, সাং-আজিজ বিড়ি মোড়, ০৭। মোঃ রাকিন (২৬), পিতা-রুহুল মাস্টার, সাং-চৈতন্যমোড়, ০৮। মোঃ জুয়েল (২৫), পিতা-জানবার, সাং-বামনপাড়া, ০৯। মোঃ সাব্বির (২২), পিতা- মোঃ শাইন ডাইভার, ১০। আলো (৩৫), পিতা-গোবিন্দ কর্মকার, সাং-বামনপাড়া (পৌর ০৯নং ওয়ার্ড), ১১। মোঃ মোমিন (৩৪), পিতা-মৃত আখতার হোসেন, সাং-বিত্তিপাড়া, সাতবাড়িয়া, ১২। মোঃ জাহিদ হাসান জয় (২২), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-সাতবাড়িয়া (কারিগরপাড়া), ১৩। মিথুন চৌধুরি (২২), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-চন্ডিপুর, ১৪। মোঃ মাহিন (২৩), পিতা-মোঃ ডাবলু কাউন্সিলর, সাং-নওদাপাড়া, সর্বথানা-ভেড়ামারা, জেলা- কুষ্টিয়াগণ সহ অজ্ঞাতনামা আসামী ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে লিখিতভাবে এজাহার দায়ের করছি যে, আমার স্বামী শ্রী সঞ্জয় কুমার প্রামানিক (৩৬), পিতা-শ্রী দুলাল চন্দ্র প্রামানিক ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন আহ্বায়ক। আমার স্বামী দীর্ঘ সময় থেকে বিএনপি-জামাতের দমন- পীড়ন সহ রাজনৈতিক হামলা/মামলার স্বীকার হয়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের চেতনা ও আদর্শ বুকে ধারন করে তৃণমূল পর্যায় থেকে জনবান্ধব রাজনীতি করে আসছে। আমার স্বামীর নিজ এলাকা সহ ভেড়ামারা উপজেলায় তার যথেষ্ট রাজনৈতিক সুনাম রয়েছে। আমার জানামতে আমার স্বামীর ভিন্ন কোন দল বা যেকোনো মতের সাথে নিজ এলাকা সহ সমাজে কোনো প্রকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্পর্ক নেই। দীর্ঘদিন ধরে সু- প্রাচীন জগৎ জননী মাতৃ মন্দির এর পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী পরিচালনা কমিটি সনাতনী সমাজের সংখ্যাগরিষ্ট সমর্থনে সনাতনী সমাজ প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হলে, এরই প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে প্রতিবারই আসন্ন দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে অদ্য বছরের ইং-০৭/০৭/২০২৩ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় উক্ত মন্দির প্রাঙ্গনে পৌর মেয়র সহ স্থানীয় গণ্যমান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মন্দিরের কমিটির গঠনতন্ত্র প্রস্তুতের মধ্য দিয়ে আসন্ন দূর্গা পূজা ১৪৩০ বঙ্গাব্দ কে সামনে রেখে সুষ্ঠভাবে পূজা পরিচালনা ও নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ তিন বছর মেয়াদী কার্যকরী কমিটি গঠনের জন্য একটি খন্ডকালীন কমিটি তৈরী করা হয়। ০১নং আসামী শোভন সহ প্রবাসীর স্ত্রীকে গণ ধর্ষন এর গ্যাং লিডার ০২নং আসামী ইয়ামিন এবং আসামী শোভনের নেতৃত্বে এলাকায় সুর্টার গং নামে চিহ্নিত ও কথিত ভয়ংকর সন্ত্রাসী বাহিনীর উক্ত আসামীগণ জগৎ জননী মাতৃ মন্দিরের আশেপাশে প্রতিনিয়ত অবস্থান করে পথচলতি মেয়েদের বিভিন্নভাবে উত্যক্ত ও নাজেহাল করা, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোটা অংকের চাঁদা তোলা, ফ্রিস্টাইলে মাদকের ব্যবহার ও ব্যবসা সহ এলাকায় মারপিট করে জনমনে আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে চলেছে। আসামীগণ তাদের পছন্দের ব্যক্তিবর্গ দ্বারা মন্দির কমিটি গঠনে দীর্ঘদিন ধরে অনধিকার হস্তক্ষেপ করে প্রতিবারই মন্দিরে সাধারন সভায় আসামী শোভনের নেতৃত্বে সুর্টার গং বাহিনীর উক্ত আসামীগণ মন্দির প্রাঙ্গনের বাহিরে এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি ও প্রতিবাদ সংক্রান্ত যেকোনো সাধারন আলোচনা সভায় অনধিকার উপস্থিতি বজায় রেখে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় শান্তিপ্রিয় নিরীহ হিন্দু জনগোষ্টীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে চলেছে। আমার স্বামী এর প্রতিবাদ করায়, ইং-০৭/০৭/২০২৩ তারিখ পৌর মেয়র সহ স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নবগঠিত খন্ডকালীন কমিটিতে পরবর্তীতে হিন্দু সাধারন জনগণ আমার স্বামীকে অবহিত না করে উক্ত পদে পছন্দ করলে হিন্দু সমাজে তার সুপরিচিতি বৃদ্ধি পায়। আসামী শোভন এলাকায় তার কু-রাজনীতি ও ক্যাডার রাজনীতির বিপরীতে সনাতনী সমাজের সংখ্যাগরিষ্টদের দ্বারা আমার স্বামীর উক্ত পদ সহ সর্বস্তরের জনসাধারনের রাজনৈতিক সুনামে হিংসার বশবর্তী হয়ে এলাকাতে প্রভাব বিস্তারে অহেতুক চেষ্টায়, ইং-০২/০৮/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ১০.৪০ ঘটিকার সময় আমাদের বর্তমান ঠিকানা ভেড়ামারা গোডাউন মোড়স্থ সংরক্ষিত খাদ্য গুদামের ভিতরে বাসার সামনে আগ্নেয় আস্ত্র, ধারালো রামদা, চা-পাতি, হাত কুড়াল প্রভৃতি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অনধিকার প্রবেশ করে আমার স্বামীকে ভেড়ামারা বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে পথরোধ করে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ দেওয়া শুরু করে। আমার স্বামী আসামীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে, ০১নং আসামী শোভন জানে মেরে ফেলার হুকুম দিলে আসামীগণ অতর্কিতভাবে আমার স্বামীর উপরে হামলা করে। হুকুম দাতা ০১নং আসামী শোভন, ০২নং আসামী ইয়ামিন ও ০৩নং আসামী প্রত্যাশা গণ তাদের হাতে থাকা ধারালো রামদা এবং ০৪নং আসামী অর্ণব তার হাতে থাকা ধারালো চা-পাতি ও ০৫নং আসামী তামিম তার হাতে থাকা ধারালো হাত কুড়াল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পর্যায়ক্রমে আমার স্বামীর মাথায় পাঁচটি স্থানে কোপ দিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে যার ফলে ক্ষতস্থানে সর্বমোট আঠাশটি সেলাই পড়ে। আমার স্বামীর সঙ্গীয় বন্ধু মোঃ বেলাল হোসের রিপন (৩৫), পিতা-মৃত জব্বার, সাং-কলেজপাড়া (পৌর ০৬নং ওয়ার্ড), থানা- ভেড়ামারা, জেলা-কুষ্টিয়া এগিয়ে গেলে ০৬নং আসামী লিখন তার নিজ হাতে থাকা ধারালো চা-পাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার বাম অংশে কোপ দিয়ে কাটা রক্তাক্ত জখম করে যার ফলে ছয়টি সেলাই পড়ে। আমার স্বামীর ঘটনাস্থলে থাকা অপর আরেক সঙ্গী মোঃ শ্যামল হোসেন (৩৫), পিতা-মোঃ জানু সর্দ্দার, সাং-চাঁদগ্রাম, থানা-ভেড়ামারা, জেলা-কুষ্টিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ০৭নং আসামী রাকিন ও ১১নং আসামী মোমিন তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে শ্যামলের মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করলে শ্যামল তার বাম হাত দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করলে ১১নং আসামী মোমিনের আঘাতটি তার বাম হাতে কনুইয়ের নিচের অংশে লেগে হাড়ভাঙ্গা জখম সহ নিলাফোলা জখম প্রাপ্ত হয়। আসামীগণের আঘাতে জখমীরা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকলে, ০৮নং থেকে ১৩নং আসামীগণ এবং অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাদের হাতে থাকা লোহার হ্যামার, লোহার রড, লোহার পাইপ দিয়ে আমার স্বামী সহ তার সঙ্গীয় বন্ধুদের পিঠে, বুকে, হাতে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারিভাবে মারপিট করে বেদনাদায়ক কালোশিরা জখম করে। আসামী শোভন তার হাতে থাকা আগ্নেয় অস্ত্র দ্বারা আমার স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি বর্ষন করে যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে দুই পায়ে জখম করে। (অসম্পূর্ণ)
এব্যাপারে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাব কে জানান, ইতিমধ্যে ২ টা আসামি কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকীদের কেও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো। সত্য উন্মোচন করতে রিমান্ড ও চাওয়া হবে। অপরাধী যতই শক্তিশালী ক্ষমতাধর হোক না কেন বিন্দু মাত্র ছাড় দেয়া হবে না।