কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :-
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় আধ্মাতিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র ১৩৩-তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ৩ দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে। সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও লালন একাডেমির আয়োজনে ১৭,১৮ ও ১৯ অক্টোবর,২০২৩ এই ৩দিন চলবে লালন স্মরণোৎসব।
লালন শাহ এর বিখ্যাত গান ‘শাঁঈ আমার কখন খেলে কোন খেলা’ সহ অসংখ্য গান লালন স্মরণোৎসবে ভক্ত-সাধুরা গেয়ে থাকেন।
লালন শাহ’র ১৩৩-তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে সামনে রেখে লালন মাজারকে সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে। মাজার প্রাঙ্গনের অডিটোরিয়ামে বসেছে বাউল ফকিরদের আসর। বাইরে লালন মাঠের মঞ্চে চলবে আলোচনা সভা শেষে গানের অনুষ্ঠান । এ উৎসবকে ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী ছেঁউড়িয়ায় কালিনদীর পাড়ে বসেছে ৩ দিনের লালন মেলা।
বাউল দর্শনের ভাবাবেগ আর উৎসুক দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে নেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। চলছে আলোক সজ্জা, পরিচ্ছন্নতা, মঞ্চ তৈরিসহ আরো নানা আয়োজন। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী, সাধক, ভক্ত, পাগল, ফকির, বাউল ও দর্শনার্থীদের জন্য নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা।
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালনের আখড়াবাড়ি মানেই যেনো সুর সাধনার এক অন্য পৃথিবী। বছর ঘুরে আবারো লালনের তিরোধান দিবস উপলক্ষে সেজে উঠছে গোটা এলাকা। পরিবার-পরিজন, বন্ধু বান্ধব ছাড়াও এ তিরোধান দিবস ছেঁউড়িয়ার লালন আঁখড়ায় এখন সাধু ভক্তদের আড্ডায় মুখরিত।
সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও লালন একাডেমির আয়োজনে রাতভর চলবে লালন মঞ্চে লালন সংগীত পরিবেশন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসছেন এই গ্রামীণ মেলার স্টলে। দূর-দূরান্ত থেকে ফকির সাধকদের আগমণ বার্তা শোনা যায় আখড়াবাড়ির আঙিনায় গেলেই। শেষ প্রস্তুতিটুকু সেরে নিচ্ছেন আখড়াবাড়িকে ঘিরে অনুষ্ঠিতব্য মেলায় অংশ নেবেন এমন দোকানিরা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পশাশ কান্তি দেব বলেন, ‘প্রতিবছরই সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত লালন মেলা অংশ নেয় সারাদেশ থেকে আসা হাজারো মানুষ। তাদের নিরাপত্তা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি এহেতেশাম রেজা আমাদের-কে বলেন, ফকির লালন সাইজীর তিরোধান দিবস-২০২৩ইং ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিগত দিনে আমরা যেভাবে এই মরমী সাধককে স্মরণ করে থাকি এবারেও সেভাবে স্মরণ করা হবে। আমরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি। লালনের সকল অনুষ্ঠানে বিদেশীরা আসেন। বিদেশীদের যেন কোন নিরাপত্তার অভাব না হয়, সেজন্য আমরা কঠোর নিরাপত্তা বলয় সাজিয়েছি। তারা বিগত দিনে যেমন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো, এবারেও যেন সেরকম স্বাাচ্ছন্দ্যবোধ করে সে ব্যাপারে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা গ্রহণ করেছি।
এই সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন কুমারখালী ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল ,কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আকিবুল ইসলাম।আরও উপস্থিত ছিলেন চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও লালন একাডেমির এ্যাডহক কমিটির সদস্য মোঃ এনামুল হক মঞ্জু, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ ও লালন একাডেমির এ্যাডহক কমিটির সদস্য মোঃ সেলিম হক।